বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:১৩ অপরাহ্ন
নোটিশ :
Wellcome to our website...

কিংবদন্তি গণসংগীত শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর আর নেই

বিনোদন ডেস্ক / ৭২৯ বার
আপডেটের সময় : শনিবার, ২৪ জুলাই, ২০২১
গণসংগীত শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর

কিংবদন্তি গণসংগীত শিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

২৩ জুলাই (শুক্রবার) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করেন। মাশুক জানান, রাত দশটার একটু আগে লাইফ সাপোর্টে থাকা ফকির আলমগীরের হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর থেকে মুহূর্তেই তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে রাত ১০টা ৫৬ মিনিটের দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

গত ১৫ জুলাই থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন ফকির আলমগীর। এরমধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৯ জুলাই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে অগ্রজ ভূমিকা রাখেন শিল্পী ফকির আলমগীর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠে বেশ কিছু গান তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ও সখিনা, নাম তার ছিলো জন হেনরি সহ আরো কিছু গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

ফকির আলমগীর ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলনে তাকে বহুবার দেখা গেছে। তিনি ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত। ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে শামিল হন এ গণসংগীত শিল্পী। এরপর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি শব্দ সৈনিক হিসেবে যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবেও  পরিচিত তিনি।

স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন এ শিল্পী। ১৯৭৬ সালে তিনি ঋষিজ শিল্পগোষ্ঠী গঠন করে গণসংগীতকে তিনি সাধারণ মানুষের মগজ ও মননে পৌঁছে দেন। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক প্রদান করে।

গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন ফকির আলমগীর। ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যারা আছেন হৃদয় পটে’সহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে তাঁর।

১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফকির আলমগীর। তাঁর বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির ও মা বেগম হাবিবুন্নেছা। ১৯৬৬ সালে শিল্পী কালামৃধা গোবিন্দ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ও পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।

একুশে পদক ছাড়াও সংগীত বিষয়ে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলা একাডেমির সম্মানজনক ফেলোশিপসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন ফকির আলমগীর ।

তিনি বাংলা একাডেমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সদস্য, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্যসহ অফিসার্স ক্লাবেরও সদস্য ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ