রান্না করা মাংস স্বাদ কম হওয়ায় আইরিন আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে।
২৪ জুলাই (শনিবার) রাতে আনোয়ারা উপজেলা হাসপাতালে স্বামীর ফেলে যাওয়া গৃহবধূ আইরিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে বাঁশখালী থানা পুলিশ। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী হারুনুর রশিদ ও ভাসুর শিরু মিয়া পলাতক রয়েছে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ২১ জুলাই ঈদের দিন আইরিন আক্তারের স্বামী হারুনুর রশিদ স্থানীয় এক প্রতিবেশীর দেয়া কোরবানির গরুর মাংস রান্না করতে দেয়। রান্না করার পর মাংসে লবন ও স্বাদ কম হয়েছে অভিযোগ তুলে আইরিনের স্বামী ও শুশুড়বাড়ির লোকজন চেচামেচি শুরু করে। বিষয়টি বাড়ির আশেপাশের প্রতিবেশি পর্যন্ত গড়ায়।
হারুনুর রশিদ মাংসে কেন লবণ কম হয়েছে, কেন স্বাদ হয়নি জানতে চেয়ে আইরিনের উপর নির্যাতন শুরু করে । শরীরের বিভিন্নস্থান আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এরপর ২৪ জুলাই (শনিবার) সকালে আবারও একই অজুহাতে নির্যাতন করলে আইরিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
পরে শুশুড়বাড়ির লোকজন আইরিনকে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আইরিনকে মৃত মৃত অবস্থায় পায়। আনোয়ারা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন জানান, আইরিনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল । মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে আইরিনের শুশুড়বাড়ির লোকজন কৌশলে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ।
বাঁশখালীর রামদাশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মিনহাজ মাহমুদ বলেন, আইরিনের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, হারুনুর রশিদ পেশায় অটোচালক । ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট তাদের বিয়ে হয়। তাদের তিনবছর ও পাঁচমাস বয়সী দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। হারুনুর রশিদ পূর্বেও যৌতুকের দাবিতে আইরিনকে নানাভাবে অত্যাচার করতো । বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদেও বেশ কয়েকবার সালিশ হয়ে হারুনুর রশিদকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।