জ্যৈষ্ঠ মাসের মিষ্টি ফলের সমারোহ আর মৌ মৌ গন্ধ জানান দেয় এটা মধুমাস। আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস আর জামের সমারোহ এখন। পাকুন্দিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজার গুলোতে মৌসুমী ফল ক্রয়-বিক্রয় যেন উৎসবের আমেজ।
জ্যৈষ্ঠ মাস আসতে না আসতেই হাট-বাজারগুলো সয়লাব হয়েছে মৌসুমী ফলে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বিখ্যাত পাকুন্দিয়ার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে এবার লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
মঙ্গলবাড়িয়ার প্রতিটি বাড়ির বসতভিটার আঙিনায় গাছে গাছে থোকায় থোকায় লাল টুকটুকে রং এর ক্ষুদ্রাকৃতির বিচি, পাতলা চামড়া ও বড় আকৃতির লিচু সবার নজর কাড়ছে। মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের সুস্বাদু ও উন্নত জাতের লিচুর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিটি লিচুই গোলাপী রঙের। শাঁস মোটা ও রসে ভরপুর এ লিচুর মূল জনপ্রিয়তা তার ঘ্রাণে।
মঙ্গলবাড়িয়ায় সুস্বাদু লিচুর উৎপত্তি সম্পর্কে প্রবীণদের মুখে শোনা যায়, ওই গ্রামের আ. হাসিম মুন্সী নামের এক স্কুল শিক্ষক বহু বছর আগে ভারতীয় একটি গোলাপী জাতের লিচুর চারা এনে বাড়ির সামনে রোপন করেছিলেন। ৫ থেকে ৭ বছর পর চারা গাছে লিচুর ফলন হয়। তার গাছের লিচু অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় উক্ত গ্রামের কৃষক বশির উদ্দিন এই গাছের কলম চারা তৈরি করে লিচুর চাষ শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারিত হতে থাকে এই লিচুর চাষ।
বর্তমানে মঙ্গলবাড়িয়া, কুমারপুর, হোসেন্দী, নারান্দী, তারাকান্দি, জাঙ্গালীয়া, সুখিয়া, ও চণ্ডিপাশাসহ উপজেলার সর্বত্রই অধিকাংশ বাড়িতে লিচুর বাগান রয়েছে। তার মধ্যে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামেই ৭-৮শ’ লিচুর বাগান রয়েছে। প্রতি বছর গাছে মুকুল আসার আগেই বেপারীরা অনেক লিচু গাছ আগাম কিনে নেয়।
পাইকাররা এখান থেকে লিচু কিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। যে লিচু আগে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা শ’ দরে বিক্রি হত সেই লিচু এখন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ লিচু কেনার জন্য পাইকারদের পাশাপাশি প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শৌখিন ও অভিজাত ফল রসিকরা ভিড় করছেন মঙ্গলবাড়িয়ায়।
এছাড়াও সিঙ্গাপুর, কুয়েত, সৌদি আরব, মালোশিয়া, লন্ডন, আমেরিকা, জার্মান, অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে যাচ্ছে মঙ্গলবাড়িয়ার এ সুস্বাদু লিচু।