দেশ বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে ভারতে গ্রেফতারকৃত বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার।
গত শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার চ্যাংড়াবান্দায় ওই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়েন সোহেল রানা। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাকে গ্রেপ্তার করার পর কোচবিহার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার ভারতীয় গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর বের হয়।
নামে-বেনামে থাকা সোহেল রানার সম্পদের মধ্যে ঢাকার অভিজাত এলাকায় ৫টি ফ্ল্যাট, ৯ কোটি টাকা মূল্যের একটি বাণিজ্যিক ভবনে জায়গা (স্পেস), ২টি প্লট ও ৩টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আরও চারটি দেশে (পর্তুগাল, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও নেপালে) তাঁর সম্পদ রয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান গতরাতে গণমাধ্যমকে জানান, সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
শেখ সোহেল রানা ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত গুলশান থানার এসআই ছিলেন। গুলশানের পর ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মালিবাগে পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) কর্মরত ছিলেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক হলেও ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এসবিতে ছিলেন। এরপর চার মাস কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমে ছিলেন।
গত বছরের ২৮ মে থেকে বনানী থানায় পরিদর্শকের (তদন্ত) দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
গত আগস্টের মাঝামাঝিতে, ই-অরেঞ্জ নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হওয়ার পর আলোচনায় আসেন সোহেল রানা।
ওই মামলায় তার বোন সোনিয়া মেহেজাবিন ও ভগ্নিপতি মাসুকুর রহমান বর্তমানে কারাগারে এবং তার চতুর্থ স্ত্রী নাজনীন নাহার (বীথি) পলাতক আছে।
গত বৃহস্পতিবার ই-অরেঞ্জের আরেক গ্রাহকের মামলায় আসামি করা হয় সোহেল রানাকে। পরদিন তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু এর আগেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সোহেল রানা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম গতকাল সাংবাদিকদের জানান, বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, চতুর্থ স্ত্রী নাজনীন নাহার ও বোন সোনিয়া মেহেজাবিনকে টাকা দিয়ে ই-অরেঞ্জ চালাতেন শেখ সোহেল রানা।
সূত্র : প্রথম আলো