বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:০১ অপরাহ্ন
নোটিশ :
Wellcome to our website...

পারভেজ চৌধুরীর আলাপ-সালাপ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’

পারভেজ চৌধুরী / ৫৪৬ বার
আপডেটের সময় : বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১

সৃজিত মুখার্জী সমসময়ে বাংলা চলচ্চিত্রের একজন সৃজনশীল নির্মাতা। সৃজিতের কাজ আমার ভালো লাগে তবে ওয়েব সিরিয়াল ‘রে’ ভালো লাগেনি। সর্বশেষ দেখেছি ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন রচিত থ্রিলার উপন্যাস থেকে সৃজিত মুখার্জী এই ওয়েব সিরিয়াল নির্মান করেছেন।

সিরিয়ালটি দেখতে গিয়ে আমার সৃজিতেরই বিভিন্ন ছবি যেমন, অটোগ্রাফ, জুলফিকার, ভিঞ্চি দা, রাজকাহিনী, বাইশে শ্রাবন আর গুমনামী’র কথা মনে পড়েছে। মনে হয়েছে এই দৃশ্যটা ঐ চরিত্রটা কোথায় যেন মিলে যাচ্ছে। সিরিয়ালে অনেক রবীন্দ্র সঙ্গীতের ব্যবহার বেশ কয়েক বছর আগে সৃজিত পরিচালিত ‘গানের ওপারে‘ ধারাবাহিকটির কথা মনে পড়ে গেল। সিরিয়ালে হোটেলে নিরুপম চন্দ যখন প্রথম মুশকান জুবেরীকে দেখেন, গোরখোদক ফালু পুলিশের ইনফরমার আঁতরকে মাটি চাঁপা দেয়ার পর উদ্ধার বেশ গোঁজামিল মনে হয়েছে। অবশ্য এরকম গোঁজামিল আরও আছে। পশ্চিমবঙ্গের নির্মাতাগণ বাংলাদেশের প্রায় চরীত্রে এক অদ্ভূত বাংলায় ডায়লগ দেন। কেন ? মুসলিম জনগোষ্ঠীর কোন পুরুষ চরিত্র দেখাতে তাঁদের গলায় কালো সুতা চৌকোণা কালো কাপড় দিয়ে একটা পুটুলি বেঁধে দেন। এটা সৃজিতের জুলফিকার ছবিতেও দেখেছি। এটা কি ? কেন ? এটা দেখতে দেখতে মাথায় প্রশ্ন এলো বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শ্যাম বেনেগাল যে ছবি করছেন সেই ছবিতেও এরকম বিভিন্ন চরীত্রের গলায় পুটুলি ঝুলিয়ে দেবেন নাকি ?

বিমান দূর্ঘটনার অংশটুকু টম হ্যাংকস অভিনিত কাস্ট এওয়ে কিংবা বাংলাদেশের জনপ্রিয় সেবা প্রকাশনীর আন্দিজে বন্দী বইটার কথা মনে পড়লো। অবশ্য বিমান দূর্ঘটনা নিয়ে প্রচুর বিদেশী ছবি আছে। স্মৃতি থেকে বলছি কর্নাটকের নাট্যকার (সম্ভবত) হিতেশ রচিত মঞ্চ নাটকে এক বন্ধুকে অন্য বন্ধুরা হত্যা করে খেয়ে ফেলে সেই নাটকের কথাও মনে পড়লো।

মুশকান জুবেরী কেবলই রবীন্দ্র অনুরক্ত নয় বলা যায় রবীন্দ্র প্রেমিক। মুশকান ‘চারুলতা’ নামে ফেইসবুকে চ্যাট করেন, সর্বক্ষণ রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন নায়িকাদের মতোই সাঁজগোজ করেন, ঠোটে সব সময় রবীন্দ্রনাথের গান, তার হোটেলের নাম রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি কিংবা মুশকানের হোটেলের এবং বাসস্থানের দেয়ালে দেয়ালে রবীন্দ্রনাথের হাতের লেখা, পংক্তিমালা এবং ছবি। গোয়েন্দা নিরুপম চন্দ যখন মুশকানের বাড়ীতে যায় মুশকান যে কফি মগে কফি পান করেন সেটাতেও রবীন্দ্রনাথের ছবি। মুশকানের পালানোর সময় বলে যান তার ফেলে যাওয়া সম্পত্তি থেকে সুন্দরপুর গ্রামে যেন রবীন্দ্রনাথের নামে একটা লাইব্রেরী করা হয়। এতে মনে হয় মুশকান জুবেরী বোধে ও মননে রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করেন। কিন্তু কি আশ্চর্য্য ! এই রবীন্দ্র ঘোরে থেকেও হন্তারক, দিনের পর দিন মানুষের মাংশ খাওয়া মুশকান জুবেরী নিজেকে বদলাতে পারেনি কিংবা রবীন্দ্রনাথও মুশকান জুবেরীর মানসপটে কোন পরিবর্তন আনতে পারেননি, আলো ফেলতে পারেননি। রবীন্দ্রনাথকে এক ধরণের অসাড়, অক্ষম এবং ব্যর্থ প্রমাণে নির্মাতা সৃজিত মুখার্জী যথেষ্ঠ মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ