ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্র আরাফাত হোসেন (৯) কে বলাৎকারের পর হত্যা করেছে মাদ্রাসার মুহতামিম অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন (৪২)। নির্যাতিত শিশুটি বলাৎকারের ঘটনা অভিভাববকে বলে দেয়ার কথা বললে এই হত্যাকান্ড ঘটায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
অভিযুক্ত মোশারফ হোসেন উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চরলক্ষীগঞ্জ হাফেজ সামছুল হক (র.) নুরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার অধ্যক্ষ। তার বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায়।
নিহত আরাফাত হোসেন ঐ মাদ্রাসা ও এতিমখানার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের ছয়আনি গ্রামে তার বাড়ি।
২৬ আগস্ট (বৃহঃস্পতিবার) বিকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে মুহতামিমের দেওয়া জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়।
গত ২১ আগস্ট (শনিবার) রাতে বলৎকারের পর আরাফাত বিষয়টি তার বাবাকে বলে দেবে জানালে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় মুহতামিম মোশাররফ হোসেন। একপর্যায়ে গলা টিপে আরাফাতকে হত্যা করে লাশ মাদ্রাসা সংলগ্ন ডোবায় ফেলে দেয়। জবানবন্দীতে মোশাররফ হোসেন এর আগেও আরাফাতকে বলৎকার করেছে বলেও স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
গত রবিবার (২২ আগস্ট) ভোর ৪টার দিকে আরাফাত হোসেনকে হত্যা করে দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউপির মোমারিজপুর গ্রামের একটি ডোবায় লাশ ফেলে দেয়। ঐদিন সকালেই তার লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় আরাফাতের বাবা বাদী হয়ে এ ঘটনায় মুহতামিমসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
দাগনভূঞা থানার ওসি ইমতিয়াজ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই দিন রাতেই মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে মুহতামিম মোশারফ হোসেন ও আরাফাতের এক সহপাঠীসহ এজাহারে উল্লেখ থাকা আরো দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পরদিন আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
আদালত গ্রেফতারকৃত মুহতামিম মোশারফ হোসেনকে চার দিনের, সহকারী শিক্ষক আজিম উদ্দিন ও নুর আলীকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবনন্দী দেয় মুহতামিম মোশারফ হোসেন। এরপর তাকে ও অন্য দুই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়।
একইসাথে গ্রেফতারকৃত সহপাঠী (১১) কে গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রেরণের আদেশ দেয় আদালত।