১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙলার কোনো নারী ‘সম্ভ্রম’ কিংবা ‘ইজ্জত’ হারাননি। বরং এটা তাঁদের আত্মত্যাগ। পুরুষের পাশাপাশি বাঙলার লাখো নারীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অর্জন হয়েছে। আমাদেরকে বিষয়টা এইভাবে ভাবতে ও বলতে শিখতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে এই আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে বাঙলার নারীদের ইজ্জত কিংবা সম্ভ্রম হারানোর মত গথবাধা শব্দ প্রয়োগ করলে নারীর অমর্যাদা হয়, মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অবদানকে খাটো করে দেখা হয়। নতুন প্রজন্মসহ আমাদের সকলকে মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগী নারীদের প্রতি এই ধরনের অমর্যাদাকর শব্দ প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও করিমগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিমত ব্যক্ত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তসলিমা নূর হোসেন।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে শিশু কিশোরদের আবৃত্তি সংগঠন কন্ঠশীলন এর উদ্যোগে ১৪ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও করিমগঞ্জ মুক্ত দিবস ২০২১ উপলক্ষে বেলা ১২ টায় প্রেসক্লাব চত্বরে আলোচনা ও কবিতা পাঠ এর আয়োজন করা হয়।
কন্ঠশীলন এর পরিচালক কবি সালেহ্ আহমেদ এর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তসলিমা নূর হোসেন।
আলোচনস সভায় মুক্তিযুদ্ধ গণগবেষণা কেন্দ্রের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইকবাল প্রধান আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে কিশোরগঞ্জ জেলা মাদক বিরোধী আন্দোলনের সভাপতি ইবনে আবদুল্লাহ শাহজাহান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ করিমগঞ্জ উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, উপজেলা স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর মোঃ জিল্লুর, গণমাধ্যমকর্মী হাবিবুর রহমান বিপ্লব ও মোঃ আব্দুল জলিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গীতিকার আবুল কাশেম এর সঞ্চালনায় দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে শিল্পকলা পরিষদের প্রশিক্ষক সুরজিত সরকার মানিক এর কন্ঠে জাগরণের গান দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে কন্ঠশীলন এর শিশুদের দলীয় পরিবেশনার পাশাপাশি আবৃত্তিকার নজরুল ইসলাম, কবি রকিব অমি, জাহিদুল হাসান রণক, জাহাঙ্গীর কবির পলাশ কবিতা আবৃত্তি করেন।
আলোচনা পর্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইকবাল ১৯৭১ সালে করিমগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মুক্ত দিবসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তসলিমা নূর হোসেন বলেন, পাকিস্তানীরা যুদ্ধে হেরে গিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে বাধাগ্রস্থ করার সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত নিয়ে ৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নৃশংসভাবে এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।
জঙ্গীবাদ মৌলবাদের মতো অপচেষ্টা দিয়ে তাদের সে চক্রান্ত আজও অব্যহত আছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আমাদের সে অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে।