আধ্যাত্মিক প্রেমে জাগ্রত বিশ্বশ্রেষ্ঠ মাওলানা হযরত জালাল উদ্দিন রুমী রহ. লিখে গেছেন মসনবী শরিফের মত কালজয়ী ইসলামিক দর্শন এবং দিওয়ানে শামস তাব্রীজ। একই সাথে মাওলানা এবং সুফিবাদ বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানে ছিলেন পরিপূর্ণ তিনি। লিখে গেছেন অসংখ্য সুফিবাদী কবিতা ও আল্লাহ কে পাবার দর্শন এ নফস কে পরিশুদ্ধ করার উপায়।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রিসার্স স্কলার এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্ত সামির আসাফ তার ‘The Poet of the Poets’ নিবন্ধে লিখেছেন-
‘গভীরতার মানদণ্ডে রুমির তুলনায় শেক্সপিয়রের মান হচ্ছে মাত্র ১০ ভাগের এক ভাগ।’
মাওলানা জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমী ফার্সি সাহিত্যের এমন একটি নক্ষত্রের নাম, যার আলো মানুষকে প্রজ্জলিত করে চলেছে ৮০০ বছরের বেশি সময় ধরে। ১২০৭ সালে জন্ম নেয়া এই আধ্যাত্মিক কবি, ইসলামী ব্যক্তিত্ব, ধর্মতাত্ত্বিক, অতীন্দ্রবাদী এবং সুফী ১৭ ডিসেম্বর ১২৭৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।। তাঁর জ্ঞানের পরিসীমা শুধু পারস্য অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকে নি। নিজ গুনে, স্বমহিমায় তা ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে, সাহিত্য প্রেমী প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।
পশ্চিমা বিশ্বের নামী দামি সাহিত্যিক ইয়েটস, শেক্সপিয়র, নেরুদা, উইলিয়াম কার্লোসদের ছাপিয়ে মাওলানা রুমির মসনবী বই এখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, পঠিত। এরই স্বীকৃতিস্বরুপ জিতে নিয়েছে আমেরিকার ‘বেস্ট সেলিং পয়েন্ট’ অ্যাওয়ার্ড।
সারা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে রুমির কবিতা সমূহ। মাওলানা রুমী তাঁর কবিতার মাধ্যমে যে দিক দর্শন এবং প্রেম আর ভালবাসার বার্তা তুলে ধরেছেন তা দেশ, কাল, জাতি এবং ভাষার গন্ডিকে অতিসহজেই অতিক্রম করে গিয়েছে। কবিতার পাশাপাশি তিনি বেশ কিছু গদ্যও লিখেছেন এবং সে গদ্যের মাধমে যে সংলাপ এবং উক্তি অবতারনা করেছেন, তা যুগে যুগে মানুষের হৃদয়কে জয় করে চলেছে। মাওলানা রুমি ছিলেন আধ্যাত্মিকতা, অতীন্দ্রিয়বাদ এবং সুফিবাদের শ্রেষ্ট ধারক এবং বাহক ছিলেন। তিনি তাঁর কবিতার মাধ্যমে মানবজাতির আত্মার রহস্য উন্মোচন করেছেন এবং সৃষ্টিকর্তার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে প্রেমকে বেঁচে নিয়েছেন।