মাত্র ১২০ টাকায় আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পুলিশে নিয়োগের স্বপ্ন দেখছে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ সাতক্ষীরার যমজ দুইবোন।
গত বুধবার (২০ এপ্রিল) সাতক্ষীরায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বিকাল ৫ টায় জেলা পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
চূড়ান্ত তালিকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন ৫৫ জন। যমজ দুই বোন ফারজানা জাহান ও ফারহানা জাহানও রয়েছেন এই তালিকায়। কোন প্রকার ঘুষ-তদবির ছাড়া নিজেদের যোগ্যতায় চাকুরি পেয়ে উচ্ছ্বসিত এই দুই সহোদরা। আবেদন প্রক্রিয়ার ১২০ টাকার বাইরে আর কোন খরচ হয়নি তাদের।
আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের ফাকরাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ফারজানা-ফারহানার বাবা আছাদুল ফকির বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আমি পঙ্গু অবস্থায় বেকার জীবন যাপন করছি। স্ত্রীর দর্জি কাজ আর পড়াশোনার পাশাপাশি মেয়েদের টিউশনির আয়ে আমাদের সংসার চলে। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও মেয়ে তিনটিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ালেখা করিয়ে আসছি। আমার বড় মেয়ে আফসানা আঁখি সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ গণিত বিষয়ে অনার্সে অধ্যয়নরত। এই দুঃসময়ে আমার যমজ ছোট দুই মেয়ের পুলিশের চাকরি হওয়ার খবরে আমি ও আমার পরিবার সহ এলাকার মানুষ খুবই খুশি।
বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০২২ এর সাতক্ষীরা জেলার প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে যারা নির্বাচিত হয়েছে তারা সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছে।
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার লক্ষে আইজিপির উদ্যোগে সম্পূর্ণ নতুন নিয়মে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষাটি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সাতক্ষীরা জেলাবাসীকে কথা দিয়েছিলাম একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর নিয়োগ উপহার দেওয়ার। আমরা আমাদের কথা রেখেছি।”
জানা যায়, সাতক্ষীরায় প্রাথমিকভাবে অনলাইনে ১ হাজার ৬০ জন কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেন। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্তভাবে ৪৩৬ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে উত্তীর্ণ হন ১৭৯ জন। পরে চূড়ান্ত ফলাফলে ৫৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর বাইরে আটজন নারী-পুরুষকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে। চূড়ান্ত নিয়োগ পাওয়া ৫৫ জনের মধ্যে যদি কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিকেলে বাদ পড়েন, তবে সেখান থেকে চূড়ান্ত তালিকায় তাদেরকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
আগামী ২৫ এপ্রিল ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে প্রার্থীদের মেডিকেল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।